অফিস ডেস্ক
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে এই হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার ফলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে দেশে শান্তি বজায় রাখা এবং দায়ীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। জেনেভা থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে ফলকার তুর্ক বলেন, গত বছর বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি উল্লেখ করেন, গত সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার কমিশনার সবাইকে শান্ত থাকার এবং যেকোনো ধরনের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রতিশোধ কেবল বিভেদকে আরও গভীর করে এবং সবার অধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিবৃতিতে ফলকার তুর্ক অন্তর্বর্তী সরকারকে হাদির মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনার। উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় মোটরসাইকেলে আসা দুই সন্ত্রাসীর গুলিতে মারাত্মক আহত হন শরিফ ওসমান বিন হাদি। রিকশায় থাকা অবস্থায় তার মাথায় গুলি লাগে। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারিভাবে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে।