শিরোনাম:

ভূমধ্যসাগরে মানবপাচারচক্রের গুলিতে মাদারীপুরের তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ২০ নভেম্বার ২০২৫ | সময়ঃ ০৫:৩২
photo

মাদারীপুরের দুই উপজেলা—রাজৈর ও সদর উপজেলার—তিনজন বাংলাদেশি যুবক মানবপাচারচক্রের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় লিবিয়াভিত্তিক মাফিয়াদের হামলায় নিহত হন রাজৈরের দুর্গাবদ্দী গ্রামের মুন্না তালুকদার, ঘোষলাকান্দির বায়েজিত শেখ এবং সদর উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের ইমরান খান। এই নির্মম ঘটনায় তিন পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

স্বজনদের অভিযোগ, উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে দালালচক্র তাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছিল। ভালো ভবিষ্যতের আশায় মুন্না ও বায়েজিত মধ্যপ্রাচ্যের রুট ধরে ইতালিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত মাফিয়াদের বুলেটের শিকার হন।

সদরের ইমরান খান গত ৮ অক্টোবর বাড়ি থেকে রওনা হন। স্থানীয় দালাল শিপন খানের সঙ্গে ২২ লাখ টাকায় ইতালিতে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি হলেও তাকে লিবিয়ায় আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এরপর পরিবার থেকে আরও ১৮ লাখ টাকা আদায় করা হয়। পহেলা নভেম্বর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাত্রা শুরুর পরই সমুদ্রে মাফিয়াদের গুলিতে প্রাণ হারান তিনজনই। পরে তাদের লাশ ফেলে দেওয়া হয় সমুদ্রেই।

মঙ্গলবার ইমরানের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছালে অন্য দুই পরিবারও একই তথ্য পেয়ে ভেঙে পড়ে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকার দালালচক্রের সদস্যদের বাড়িতে তালা ঝুলে যায়। অভিযুক্ত শিপন খানের পরিবার অভিযোগ অস্বীকার করলেও এলাকাবাসীর দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই সে লিবিয়া থেকে মানবপাচারের কাজ করছে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লিবিয়ায় তিন যুবকের মৃত্যুর খবর তারা পেয়েছেন। কোনো পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানবপাচার বা দালালচক্র—কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।

তিন যুবকের মৃত্যু শুধু তাদের পরিবার নয়, পুরো স্থানীয় সমাজকে শোকের আবহে ডুবিয়ে দিয়েছে।

শেয়ার করুন