অফিস ডেস্ক
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও ঢাকা মহানগর জিয়া মঞ্চের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার আফরোজা ফিরোজ মিতা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। আইন পেশার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যারিস্টার মিতা জানান, ছোটবেলা থেকেই রাজনীতির পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তাঁর বাবা অ্যাডভোকেট এবিএম ফিরোজ ছিলেন জেলা বারের প্রেসিডেন্ট, বিএনপির পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং রেডক্রিসেন্টের দীর্ঘদিনের সেক্রেটারি। বাবার আদর্শ ও মানবসেবার চেতনা থেকেই রাজনীতির প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয় তাঁর। ‘পড়াশোনা শেষ করে কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করি জাতীয়তাবাদী ফোরামের মাধ্যমেই। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তখন থেকেই রাজনীতি শুরু হয়,’ বলেন ব্যারিস্টার মিতা।
রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি হয় ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল-এর চেম্বারে কাজ করার সময়। সেই সূত্রে বিএনপির নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠতায় তিনি দলের বিভিন্ন কার্যক্রমে যুক্ত হন। দলীয় আইনজীবী ফোরাম ও লিগ্যাল এইড কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন ব্যারিস্টার মিতা। তিনি বলেন, ‘আমার এলাকা যেহেতু মুন্সিগঞ্জ, তাই দলের কেউ আইনি সাহায্য চাইলে যথাসাধ্য সহায়তা করি।’ রাজনীতির পাশাপাশি শিক্ষা ও সমাজসেবায়ও তাঁর ভূমিকা অনন্য। নিজ উদ্যোগে গ্রামের স্কুল প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন তিনি। ‘শিক্ষাকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে চাই,’ বলেন এই আইনজীবী। নারীর অবস্থান ও সুযোগ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মিতা মনে করেন, যোগ্যতা ও মেধাই নারীর আসল শক্তি। ‘ছেলে-মেয়ে বলে কিছু নেই। যোগ্যতা থাকলে মেয়েরাও সব করতে পারে,’ বলেন তিনি। তবে তিনি স্বীকার করেন, আইন পেশায় এখনো পুরুষের প্রাধান্য রয়েছে। তাঁর পরামর্শ, ‘মেয়েদের লেগে থাকতে হবে, মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে নিজেদের জায়গা তৈরি করতে হবে।’
জাতীয় লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি দরিদ্র মামলাকারীদের বিনা পারিশ্রমিকে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন। তাঁর ভাষায়, ‘১০টা মামলা করলে ২টা ফ্রি করি—বিশেষ করে মুন্সিগঞ্জের মামলাগুলো।’ সম্প্রতি তিনি “ব্যতিক্রম” নামের নিজস্ব সংস্থা ও “ড্যাব”-এর যৌথ উদ্যোগে একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করেন, যেখানে শতাধিক মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ পান। রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্যারিস্টার মিতা বলেন, ‘আমার কাছে রাজনীতি মানে মানবসেবা। মুন্সিগঞ্জ আমার জন্মভূমি, তাই এই জেলার উন্নয়নেই কাজ করতে চাই।’ তিনি জানান, সুযোগ পেলে যোগাযোগব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবেন।
‘ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে হলেও মুন্সিগঞ্জ যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। এতদিন বড় বড় মন্ত্রী-প্রেসিডেন্ট থাকা সত্ত্বেও উন্নয়ন হয়নি—আমি চাই এটা বদলাতে।’ ব্যারিস্টার আফরোজা ফিরোজ মিতা মনে করেন, ঐতিহ্যবাহী মুন্সিগঞ্জ জেলা শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটনে বিশাল সম্ভাবনাময়। ‘পদ্মা নদী ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করতে পারলে এখানে পর্যটনের বিশাল সুযোগ তৈরি হবে,’ বলেন তিনি। শেষে তিনি বলেন, ‘আমি চাই মুন্সিগঞ্জের প্রতিটি মানুষ ভালো থাকুক। ব্যক্তিগতভাবে, সামাজিকভাবে, উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে আমি পাশে থাকতে চাই।’
প্রসঙ্গত, ব্যারিস্টার আফরোজা ফিরোজ মিতা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও বিএনপির সক্রিয় কর্মী। তিনি আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসন থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।