অফিস ডেস্ক
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন কোনো আগ্রাসন হলে তাৎক্ষণিক ও ভয়াবহ প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। আইআরজিসি কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ পাকপুর বলেছেন, “আমরা এমন প্রতিক্রিয়া দেখাবো যা শত্রুকে নরকে পরিণত করবে।”
এই কঠোর ভাষ্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন ইরান ও ইরাকের মধ্যে কৌশলগত নিরাপত্তা আলোচনাগুলো তুঙ্গে রয়েছে। সম্প্রতি ইরাকের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কাসেম আল আরাজি নেতৃত্বে এক উচ্চস্তরের প্রতিনিধি দল আইআরজিসি প্রধান পাকপুরের সঙ্গে বৈঠক করেন; বৈঠকে ইরাকের সামরিক, গোয়েন্দা ও কূটনৈতিক প্রতিনিধি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে আল আরাজি স্পষ্ট জানিয়েছেন, “ইরাকের মাটি কখনোই ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। ইরাকের নিরাপত্তা মানেই ইরানের নিরাপত্তা।” দুইপক্ষের আলোচনায় প্রধান ফোকাস ছিল সীমান্তে অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধ, বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণে যৌথ পদক্ষেপ এবং সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো। এই উদ্দেশ্যেই গঠিত হচ্ছে একটি যৌথ নিরাপত্তা কমিটি, যা স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন বলে জানানো হয়েছে। বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে ইরাকের উত্তরাঞ্চল—কুর্দিস্তান অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকাগুলো যাতে ইরান-বিরোধী গোষ্ঠীর আস্তানায় পরিণত না হয়।
বৈঠকে ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসন এবং তা নিয়ে ইরানের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও আলোচনা হয়। আল আরাজি উল্লেখ করেন, ১২ দিনের সংঘর্ষের সময় বিশ্বমঞ্চে মধ্যপ্রাচ্য নজরে ছিল; ইরানে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার আশঙ্কা থাকলেও বাস্তবে দেশটির জনগণ বিপ্লব ও জাতীয় ঐক্যের প্রতি দৃঢ় ছিল।
জেনারেল পাকপুর বলেন, শত্রুপক্ষ আশা করেছিল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা প্রথম ধাপে নষ্ট হয়ে যাবে; কিন্তু বাস্তবে ইরান নির্ধারিত লক্ষ্যে সফলভাবে আঘাত হেনেছে। তার কথায়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর থাকায় শত্রুর পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ইরানের অভ্যন্তরে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল, যা দার্শনিক ও জনগণের সংহতির কারণেই ব্যর্থ হয়েছে।
সংক্ষেপে, বৈঠক ও আইআরজিসির ঘোষণায় বার্তা স্পষ্ট—ইরান তার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনোরকম আপস করবে না; যে কোনও আগ্রাসনের জবাবে মোকাবিলা হবে দ্রুত, নিখুঁত ও কঠোরভাবে।