শিরোনাম:

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি 'আগুন যখন অল্প ছিল, ফায়ারের গাড়ি ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি'

সংবাদ৫২ ডেস্ক
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৯ অক্টবার ২০২৫ | সময়ঃ ০৫:৫০
photo

সামান্য আগুনে শুরু। মুহূর্তের ব্যবধানে ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। অল্প সময়ের মধ্যেই ভয়াবহতায় রূপ নেয় অগ্নিকাণ্ড। ফায়ার সার্ভিসের উপস্থিতি সত্ত্বেও প্রাথমিক পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় ক্ষতির মাত্রা বাড়তে থাকে দ্রুত। শেষ পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ, পুড়ে ছাই হয়ে যায় হাজার কোটি টাকার পণ্যসামগ্রী।

রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুন লাগা ভবন থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। ধ্বংসস্তূপের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের পণ্যের শেষ চিহ্ন খুঁজছেন অসংখ্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী। অনেকে ভোর থেকে অপেক্ষা করলেও এখনো ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পাননি তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে আগুন লাগে কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের কেমিক্যাল গোডাউনে। শুরুতে আগুন ছিল সামান্য; কিন্তু আধা ঘণ্টার মধ্যে তা নিয়ন্ত্রণে আনা যেত বলে দাবি করেছেন কর্মরতরা। অভিযোগ উঠেছে, ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো ঘটনাস্থলে পৌঁছেও অনুমতির অপেক্ষায় প্রায় আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিল—যার ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

কুইক এক্সপ্রেসের কর্মী সাঈদ বলেন, “দুপুর সোয়া ২টার দিকে আগুন দেখি। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো আসে, কিন্তু ৮ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকতে পারছিল না। ওই সময়টা যদি নষ্ট না হতো, এত বড় ক্ষতি হতো না।”

অন্যদিকে, কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের কর্মী আল-আমিন জানান, তার প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাত টন পণ্য আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, “আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের দেরি না হলে হয়তো কিছু রক্ষা পেত।”

একই প্রতিষ্ঠানের আলমগীর বলেন, “প্রথমে ছোট আগুন ছিল। কিন্তু তারা অনুমতির জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। পরে যখন আগুন ভয়াবহ হয়ে গেল, তখন একের পর এক ইউনিট পাঠানো হলো। এটা এক ধরনের অব্যবস্থাপনা।”

ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্টস কোম্পানি সুপ্রিম স্টিচ লিমিটেডের এক কর্মী জানান, তাদের পাঁচটি শিপমেন্ট সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। প্রতিটি চালানে এক থেকে দেড় টন ফেব্রিক্স ছিল। “এগুলো দিয়ে নতুন অর্ডারের স্যাম্পল তৈরি হতো। এখন পুরো ফ্যাক্টরি বিপদে,” বলেন তিনি।

ওরিয়ন ফার্মার প্রতিনিধি জানান, “আমাদের ওষুধ তৈরির কাঁচামাল এখানে ছিল। ফায়ার সার্ভিসের স্পেশাল টিম জানিয়েছে, কোনো মালামাল অক্ষত নেই।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আগুন লাগার আগে কিছুক্ষণ মালামাল খালাস বন্ধ ছিল। পরে গেট খোলার পর ভেতরে কিছু কর্মী ঢোকার পরপরই আগুন দেখা যায়। একটি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি উপস্থিত থাকলেও তারা প্রাথমিকভাবে কোনো কার্যক্রম শুরু করেনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
সংস্থাটির পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “ফায়ার সার্ভিসকে প্রবেশে বাধা দেওয়ার তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাদের কার্যক্রমে কোনো বিলম্ব হয়নি।”

শেয়ার করুন