অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতেই আবারও বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে এ হামলায় ৪০ জন নিহত এবং অন্তত ১৭০ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নারী ও শিশু।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্পিন বোলদাক শহরটি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের সংলগ্ন, যা কৌশলগতভাবে দুই দেশের বাণিজ্য ও সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গত ৯ অক্টোবর কাবুলে তেহরিক-ই তালেবানের (টিটিপি) শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। তার পরদিনই সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে শুরু হয় পাক-আফগান সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ।
চার দিন তীব্র লড়াই চলার পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়। সেই বিরতির মেয়াদ শেষ হয় শুক্রবার দুপুর ১টায়। কিন্তু যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন করে হামলা চালায় পাকিস্তান।
তোলো নিউজকে হামলার শিকার হাজি বাহরাম নামের এক আহত ব্যক্তি বলেন,
“আমি ইতিহাসে এমন অবিচার দেখিনি। একটি দেশ, যারা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে— তারা নারী, শিশু ও বেসামরিক মানুষের ওপর বোমা ফেলেছে।”
বিমান হামলার পাশাপাশি পাকিস্তানি স্থলবাহিনীও আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করেছে স্পিন বোলদাকের নোকলি, হাজি হাসান কেলাই, ওয়ার্দাক, কুচিয়ান, শহীদ ও শোরবাক এলাকায়।
এতে বহু বাড়িঘর ও দোকান ধ্বংস হয়েছে, অনেক মানুষ হতাহত হয়েছেন।
আফগানিস্তান-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার মূল কারণ তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। পাকিস্তানের সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ এই গোষ্ঠীটি দীর্ঘদিন ধরে দেশটির জন্য বড় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে আছে।
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, টিটিপি আরও বেপরোয়া ও সক্রিয় হয়ে ওঠে। পাকিস্তান অভিযোগ করে, আফগান মাটিতে আশ্রিত এই সংগঠন দেশটির ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা চালাচ্ছে, আর আফগান তালেবান সরকার তাদের আশ্রয় ও সহযোগিতা দিচ্ছে।