অফিস ডেস্ক
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকেই অনুদানের প্রবাহ দ্রুত বেড়ে গেছে। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে বর্তমানে ব্যাপক পরিসরে অর্থ সংগ্রহ চলছে। সরাসরি নগদ অনুদানের পাশাপাশি অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমেও অর্থ জমা পড়ছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ১১টি দানবাক্সে জমা হওয়া নগদ অর্থ, ৫০০ রুপির নোট থেকে শুরু করে খুচরা টাকা এবং কিছু বিদেশি মুদ্রাসহ মোট অনুদানের পরিমাণ ইতোমধ্যে তিন কোটি রুপি ছাড়িয়েছে। হুমায়ুন কবির জানান, প্রতিদিনই তাঁর বাড়িতে অনুদানের টাকা গণনা করা হচ্ছে এবং সংগ্রহিত অর্থ মসজিদ নির্মাণে ব্যয় করা হবে। স্থানীয় পর্যায়ে এই তহবিল সংগ্রহ অভিযানকে ঘিরে উৎসাহ ও বিতর্ক—দুটিই সমানভাবে বাড়ছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন ৬ ডিসেম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষের ঢল নামে। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও লোকজন যোগ দেন। অনেকে মাথায় ইট বহন করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন, যা প্রতীকী আকারে নির্মাণকাজে অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দেয়। ওইদিনের জনসমাবেশ থেকে হুমায়ুন কবির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে উদ্দেশ করে কড়া ভাষায় সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন, মসজিদ নির্মাণে বাধা দেওয়া হলে তিনি মাথা নোয়াবেন না এবং প্রয়োজনে শহিদ হতেও প্রস্তুত। হুমায়ুন কবির আরও বলেন, দেশে মন্দির, গির্জা নির্মাণের স্বাধীনতা যেমন আছে, তেমনি সংবিধান অনুযায়ী মসজিদ নির্মাণের অধিকার থেকেও মুসলমানরা বঞ্চিত হতে পারেন না। সুপ্রিম কোর্ট নিজেই স্বীকার করেছে যে বাবরি মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়েছিল; তবে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে সেখানে মন্দির নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, একই সাংবিধানিক অধিকার অনুযায়ী তারা বেলডাঙায় মসজিদ নির্মাণ করবেন। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা ভারতজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। একই তারিখে বেলডাঙায় নতুন করে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।