শিরোনাম:

আইইএলটিএস জালিয়াতি ও ভুল ফলাফলে যুক্তরাজ্যে ভিসা—চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বার ২০২৫ | সময়ঃ ০৬:৫৫
photo

শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে প্রতিবছর লক্ষাধিক মানুষ ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য আইইএলটিএস পরীক্ষা দেন। কিন্তু সাম্প্রতিক এক তদন্তে উঠে এসেছে এক চমকে দেওয়া বাস্তবতা—ইংরেজি ভাষার পরীক্ষায় ফেল করা সত্ত্বেও হাজার হাজার অভিবাসী যুক্তরাজ্যের ভিসা পেয়েছেন। ভুল ফলাফল, প্রশ্নফাঁস এবং জালিয়াতির জটিল সমন্বয় ঘিরে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ, চীন ও ভিয়েতনামে আইইএলটিএস পরীক্ষায় গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। ৮০ হাজার পরীক্ষার্থীকে ভুল ফলাফল প্রদান করা হয়েছে—যার মধ্যে ফেল করা ব্যক্তিদেরও পাস দেখানো হয়েছে। ফলস্বরূপ, শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যকর্মী ও বিভিন্ন পেশার অনেক অভিবাসী ভিসা পাওয়ার যোগ্য না হয়েও যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছেন।

আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফলে ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ ঘটেছিল। তাদের দাবি, মাত্র ১ শতাংশ পরীক্ষা এ ত্রুটিতে প্রভাবিত হয়েছে—যার সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার। বিশেষত লিসেনিং ও রিডিং অংশের স্কোরে এই ভুলের প্রভাব পড়েছে। সম্প্রতি বিষয়টি শনাক্ত হলে আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।

এরই মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টি অযোগ্য অভিবাসীদের নির্বাসনের দাবি তুলেছে। একইসঙ্গে জালিয়াতি ও নিরাপত্তা ত্রুটির দায়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট এবং আইডিপি-এর ওপরও কঠোর সমালোচনা হচ্ছে—যারা যৌথভাবে আইইএলটিএস পরিচালনা করে।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়—ব্রিটিশ চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা। তাদের মতে, এনএইচএস-এর অনেক অভিবাসী স্বাস্থ্যকর্মীর ইংরেজি দক্ষতা মানদণ্ডে পৌঁছায় না। এতে রোগীদের চিকিৎসা নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ভাষা পরীক্ষায় এ ধরনের জালিয়াতি বিশ্বব্যাপী অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতি আস্থার বড় সংকট তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে কঠোর নজরদারি ও স্বচ্ছতা না বাড়ালে এমন অনিয়ম আরও বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

শেয়ার করুন