শিরোনাম:

যাত্রী সেজে হানা; টার্গেট শিক্ষার্থী ও পথচারী: রংপুরে বেপরোয়া ছিনতাইচক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বার ২০২৫ | সময়ঃ ০৩:৪০
photo

রংপুর নগরী কি ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে—এমন প্রশ্ন এখন শহরবাসীর মুখে মুখে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নগরীর ব্যস্ততম পয়েন্টগুলোকেও ছাড় দিচ্ছে না অপরাধীরা। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় যাত্রী সেজে বা চলন্ত অবস্থায় ছোঁ মেরে ছিনতাই এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশি টহল ও নজরদারির দুর্বলতায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এসব সংঘবদ্ধ চক্র।

টিউশনি শেষে ফেরার পথে এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। তিনি জানান, শাপলা চত্বর থেকে চারতলা মোড়ের উদ্দেশ্যে ওঠা অটোরিকশার ভেতর দুই যাত্রী বেশধারী ছিনতাইকারী চাকুর মুখে জিম্মি করে তার মানিব্যাগ থেকে ৩,৪০০ টাকা এবং বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে পিন আদায় করে ৫১৫ টাকা হাতিয়ে নেয়। চালকও এতে নীরব ভূমিকা পালন করেন, যা ঘটনার সঙ্গে তার সংযুক্তির সন্দেহ আরও জোরালো করে।

নগরীর অন্যান্য এলাকাতেও একই কায়দায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। মুন্সিপাড়া কবরস্থান ঈদগাহ মাঠের সামনে একজন বাসিন্দার কাছ থেকে চলন্ত অটোরিকশায় থাকা চারজন ১,০০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। দিনের আলোয় জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় এমন দুঃসাহসী অপরাধ শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

গত কয়েকদিনে রংপুরজুড়ে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো স্পষ্ট করে দিচ্ছে—একটি ‘অটোরিকশা সিন্ডিকেট’ সক্রিয় রয়েছে, যারা চালকসহ সংগঠিতভাবে এই অপরাধগুলো পরিচালনা করছে। শহরবাসীর দাবি, ঘটনাগুলো বাড়লেও পুলিশের দৃশ্যমান তৎপরতা নেই। চেকপোস্ট, টহল, সিসিটিভি নজরদারি—সবই কার্যত দুর্বল হয়ে আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক—সবাই এখন উদ্বিগ্ন। তারা বলছেন, “শহরে চলাচলই এখন আতঙ্কের কারণ। নিরাপত্তা ছাড়া নাগরিক জীবনের স্বাভাবিকতা সম্ভব নয়।”

অবিলম্বে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সিসিটিভি নজরদারি জোরদার, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা টহল বৃদ্ধি, অটোরিকশা চালকদের ডাটাবেজ তৈরি এবং সন্দেহভাজন অটোরিকশাগুলোর ওপর কঠোর মনিটরিংয়ের দাবি জানাচ্ছেন সবাই। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হলে শান্তির নগরী রংপুর তার নিরাপত্তার পরিচিতি হারাবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

নগরবাসী বলছে—তারা আতঙ্ক নয়, নিরাপত্তা ও স্বস্তি নিয়ে চলাফেরা করতে চায়।

শেয়ার করুন