চার দশকেরও বেশি সময় পর আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (চাকসু) নেতৃত্বে ফিরল ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ এবারের সপ্তম চাকসু নির্বাচনে ভিপি-জিএসসহ মোট ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতেই বিজয়ী হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান,
“নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিল এবং ভোটারদের ব্যাপক উৎসাহ ও অংশগ্রহণে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।”
ভিপি (সহসভাপতি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের এমফিল শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহিম হোসেন।
তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের সাজ্জাত হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।
জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব, যিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক এবং ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
২৬টি পদের মধ্যে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে একমাত্র জয় এসেছে এজিএস (সহসাধারণ সম্পাদক) পদে।
এই পদে আইয়ুবুর রহমান ৭ হাজার ১৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রশিবিরের সাজ্জাত হোছন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট।
এবারের নির্বাচনে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সহ খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয় পেয়েছেন ছাত্রী তামান্না মাহবুব। তার বিজয় চাকসু নির্বাচনে নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ইসলামী ছাত্রশিবির সর্বশেষ বিজয়ী হয়েছিল ১৯৮১ সালের চাকসু নির্বাচনে।
সেই নির্বাচনে ভিপি হয়েছিলেন জসিম উদ্দিন সরকার এবং জিএস ছিলেন আবদুল গাফফার— দুজনই ছিলেন সংগঠনটির তৎকালীন নেতা।
দীর্ঘ ৪৪ বছর পর আবারও চাকসুর নিয়ন্ত্রণে ফিরে এসেছে ইসলামী ছাত্রশিবির, যা সংগঠনটির জন্য এক ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।