শিরোনাম:

আগামী নির্বাচনে তরুণদের প্রাধান্য দিতে চায় বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ২৩ অক্টবার ২০২৫ | সময়ঃ ০৫:৩৩
photo

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরুণ প্রার্থীদের বেশি সংখ্যায় মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে বিএনপি। দলটির ঢাকা অফিস থেকে এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের কাছে আনুষ্ঠানিক বার্তা পাঠানো হয়েছে।

দলের দায়িত্বশীল এক নেতা জানিয়েছেন, ৪৫ বছরের পুরোনো এই দলে বহু অভিজ্ঞ ও সাবেক সংসদ সদস্য রয়েছেন, যাদের অনেকের বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে। তারা এলাকায় সম্মানিত হলেও, নতুন ভোটারদের বাস্তবতা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে এবার দল তরুণ নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দিতে চায়।

বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৮ সালের পর গত ১৭ বছরে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অধিকাংশ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। ফলে ২০০৮ সালে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে ছিল, তারা এখন ৩৫ বছরের তরুণ ভোটার—যারা প্রথমবারের মতো অংশ নেবেন এমন এক নির্বাচনে, যেখানে ভোটারদের প্রায় ৬০ শতাংশই তরুণ।

বিএনপির নিজের এবং বিভিন্ন সংস্থার সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ২৫ শতাংশ ভোটার এখনও অনির্ধারিত—তারা কার পক্ষে ভোট দেবেন তা ঠিক করেননি। এদের মধ্যে বড় অংশই তরুণ। তাই বিএনপি মনে করছে, তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য তরুণ প্রার্থীরাই হতে পারেন সবচেয়ে কার্যকর প্রতীক।

দলীয় বিশ্লেষণে আরও বলা হয়েছে, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানসহ সাম্প্রতিক আন্দোলনে তরুণরা ছিল নেতৃত্বের কেন্দ্রে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না পেলেও, তরুণদের ভোট আচরণে নতুন ধারা লক্ষ করা গেছে। এসব বিবেচনায় বিএনপি এবার “ত্যাগী ও আন্দোলনমুখী তরুণদের” প্রার্থী হিসেবে অগ্রাধিকার দিতে চায়।

একই সঙ্গে বার্তায় তারেক রহমানকে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে দলীয় সহায়তায় তরুণ প্রার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা উচিত—যাতে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে সাংগঠনিক ও আর্থিক বাধা ছাড়াই।

এদিকে তরুণ প্রার্থীদের গুরুত্ব বিবেচনায় বিএনপি তরুণ নেতৃত্বনির্ভর রাজনৈতিক দল এনসিপিকে নিজেদের নির্বাচনী জোটে টানার চেষ্টা করছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি এনসিপিকে ২০টি আসন ছাড়ার প্রস্তাব বিবেচনা করছে। দলের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুসন্ধান অনুযায়ী, বিএনপির পূর্ণ সমর্থন ও বিদ্রোহী প্রার্থী না দাঁড়ালে ৮টি আসনে জয় পেতে পারে এনসিপি প্রার্থীরা। বাকি ১২টি আসনে জয়ের সম্ভাবনা তুলনামূলক কম হলেও, জোট রাজনীতির স্বার্থে বিএনপি এ ছাড় দিতে প্রস্তুত।

বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ প্রার্থী ও জোট রাজনীতির এ কৌশল বিএনপির নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন মাত্রা আনতে পারে—যদি তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দলীয় ঐক্য ও অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হয়।

শেয়ার করুন