শিরোনাম:

নির্বাচন ঘিরে উপদেষ্টাদের সম্ভাব্য পদত্যাগ: কোন মন্ত্রণালয় কার হাতে যেতে পারে—সচিবালয়ে জোর গুঞ্জন

সংবাদ৫২ ডেস্ক
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বার ২০২৫ | সময়ঃ ০৫:৩৩
photo

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের দুই ছাত্র উপদেষ্টা—মো. মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সম্ভাব্য পদত্যাগ এখন রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। এই দুই উপদেষ্টা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তারা পদত্যাগ করলে এসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কার হাতে যাবে—তা নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ভেতরে-বাইরে তীব্র গুঞ্জন চলছে।

সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তে নতুন উপদেষ্টা নিয়োগের সম্ভাবনা প্রায় নেই। বরং বর্তমান উপদেষ্টাদের মধ্যেই দপ্তর পুনর্বণ্টনের সম্ভাবনাই বেশি বিবেচিত হচ্ছে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাব্য সময় ১০ বা ১১ ডিসেম্বর। নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে অনেকদিন ধরেই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন বা না করুন—তাদের সরে দাঁড়ানো নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই একমত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় সচিবালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। সেখানেই তিনি পদত্যাগ ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিতে পারেন বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর মধ্যে জোর গুঞ্জন রয়েছে। এমনও ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিবারই দুজনের শেষ আনুষ্ঠানিক বৈঠক হতে পারে।

বর্তমানে মাহফুজ আলম তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে, আর আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছেন।

গুঞ্জন রয়েছে, তাদের পদত্যাগ কার্যকর হলে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর এভাবে পুনর্বণ্টন হতে পারে:

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়
এই দপ্তর পেতে পারেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বর্তমানে তিনি নৌপরিবহন ও শ্রম–কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার আলোচনায় রয়েছেন। তিনি বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন।

তথ্য ও সম্প্রচার এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়
এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেতে পারেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বর্তমানে তার হাতে। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী পদে নিয়োগ পাওয়া অধ্যাপক আলী রীয়াজকেও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

তবে উপদেষ্টা পরিষদের অভ্যন্তরীণ গুঞ্জন যাই থাকুক, সবশেষ সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বর্তমানে উপদেষ্টা রয়েছেন ২২ জন। দুইজন পদত্যাগ করলে সংখ্যা নেমে আসবে ২০-এ। উল্লেখযোগ্য হলো—প্রধান উপদেষ্টা নিজেই পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন, এবং দশজন ছাড়া বাকি উপদেষ্টারা একাধিক দপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।

নির্বাচনের প্রাক্কালে উপদেষ্টা পর্যায়ে এই সম্ভাব্য পরিবর্তন রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, এমনটাই মনে করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনেকেই।

শেয়ার করুন