শিক্ষকের মানবতা
আতিকুর রহমান টিপুঃ
মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালের পুরনো ভবনের নীচতলার ২ নম্বর কেবিনে মুন্সিগঞ্জ শহরের ইদ্রাকপুর ২ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা ভর্তি হয়েছেন আজ বুধবার সকালে গাইনী সমস্যা নিয়ে। তার অবস্থা অনেকটা আশংকাজনক। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় শিক্ষিকা কে। স্ত্রীর অসুস্থতার কথা শুনে তড়িৎ ছুটে আসেন সদর হাসপাতালে। ছুটে আসেন কলিক শারমিন আখতারও তাকে দেখতে হাসপাতালে। এসেই নানা দিকে ছুটছেন তিনি। কলিকের অসুস্থতায় অনেকটা পেরেশান মনে হচ্ছিলো তাকে। যাই হোক দুপুর ২ টার দিকে শিক্ষকা কে ওটিতে নেয়া হয়। গাইনী ডাক্তার ও নার্সরা ওটির ভেতর চেষ্টা করছিলেন নিরাপদ ডেলিভারীর জন্য।যদিও সন্তানটি গর্ভেই প্রাণ হারিয়েছে।যার কারণে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলো রোগী।শেষে সফল হলেন ডাক্তার।প্রানে বেঁচে গেলেন শিক্ষিকা।কিন্তু হঠাৎ আরেক সদ্য সন্তান জন্ম দেয়া এক মাকে নিয়ে স্বজনরা আহাজারীতে পরিবেশ ভারী করে তুললো।কোন ক্রমেই রোগীর ব্লাড বন্ধ করা যাচ্ছেনা।রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিতে হবে।কিন্তু জরুরী ভাবে রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু কোথায় পাবে এই মুহূর্তে রক্ত?রক্তের গ্রুপ ওপজিটিভ।রক্ত না হলে রোগীকে বাঁচানোটা কঠিন হবে জানালো কত্যর্বরত ডাক্তার।সামান্য সময়ের মধ্যে কিভাবে যোগার করবে রক্ত!এসবই শিক্ষক শারমিন আক্তারের সামনেই ঘটছিলো।শিক্ষকের হৃদয় নেড়ে উঠলো।রক্তের অভাবে একজন মায়ের মৃত্যু হবে? সন্তান এতিম হবে?রোগীর রয়সও কেবল মাত্র ১৭।আর দেরী করলেন না শিক্ষক শারমিন আক্তার।দ্রুত রক্ত দিলেন ১৭ বছরের তরুণী মাকে।দুর্বল শরীরে রোগীকে রক্ত দেয়ার পর শারমিন আক্তারের শরীর কাঁপছিলো।কিন্তু মানবিক কাজের তৃপ্তিতে তার কাঁপুুনীটা যেনো হারিয়ে গেলো।দৃশ্যত অনেক মানুষই সেখানে উপস্থিত ছিলো কিন্তু কেউ সাড়া না দিলেও উপস্থিত ক্ষেত্রে একজন শিক্ষক শারমিন আক্তার প্রস্তুতি ছাড়া তাৎক্ষনিক যা করলেন তা শিক্ষক সম্প্রদায়কে করেছে গর্বিত।শারমিন আক্তার ইদ্রাকপুর ২ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।যদিও রক্তদানের অনেকগুলো সংস্থা আছে কিন্তু উপস্থিক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ভাবে মানবিক ভাবে এগিয়ে আসাটাও মহৎ উদ্যােগ।