দেশের বাইরে থেকেও প্রায় শতাধিক নাটক প্রযোজনা করেছেন বোরহান উদ্দিন
বিনোদন প্রতিবেদক: ৮ম শ্রেনী থেকেই উপ্যনাস লিখতেন বোরহান উদ্দিন। একতা প্রকাশনী থেকে ২০০৪ সালে তার প্রথম উপ্যনাস "কষ্ট ভালোবাসায়" প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে একে একে তার আরো ৪টি উপন্যাস যথাক্রমে- কি দোষ ছিলো ভালোবাসায়, দুই প্রিয়ার এক প্রিয়, মনোঃকষ্ট, বোরহানের কবিতা গুচ্ছ প্রকাশিত হয়।
এরপর ২০০৮ এ বোরহান এর রচিত প্রথম মঞ্চ নাটক "সুদের পরিনাম" ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি সনামধন্য নাট্য সংগঠন শিবনগর হাই স্কুলে প্রথম মঞ্চস্থ করেন। এরপর বোরহান, একে একে অনেক নাটক লিখেন যা বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে।
ছোট থেকেই অভিনেতা হওয়ার সুপ্ত ইচ্ছে ছিলো বোরহানের আর সেই ইচ্ছে থেকেই রাজধানীর বেলী রোডের বিভিন্ন জায়গায় ছুটাছুটি ও করেছেন তিনি তবে অভিনয়ের সুযোগ হয়ে উঠেনি। সুযোগ না হয়ে উঠার তিব্র কষ্ট থেকে প্রতিজ্ঞা করেন, কখনো সুযোগ হলে তিনি নতুনদের সৃজনশীলতা প্রকাশের সুযোগ করে দেবেন।
একপর্যায়ে বোরহান ২০১৭ সালে ছেলের নামে "রাদ মাল্টিমিডিয়া" নামক নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেন এবং প্রতিষ্ঠা থেকেই তিনি নতুন এবং পুরাতন বিভিন্ন কলাকৌশলীদের নিয়ে নিয়মিত একে একে প্রায় ৭০টি নাটক, ২০টি শর্ট ফিল্ম, ৫টি মিউজিক ভিডিও এবং মেগা ধারাবাহিক প্রযোজনা এবং পরিবেশনা করেন।
তবে হটাৎ ২০২৫ সালের ২১ জানুয়ারি তার ইউটিউব চ্যানেলটি হ্যাক হয় এবং তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।পরবর্তীতে তার সহধর্মিণী (শিউলি সুলতানা), মেয়ে (বর্নালী উদ্দিন স্বর্গ) এবং ছেলে (আহনাফ আফতাহি রাদ) এর অনুপ্রেরণায় পুনরায় ডিজিটাল প্লাটফর্ম ইউটিউবে যাত্রা শুরু করেন।
এবার ঈদুল ফিতরের জন্য "রাদ মাল্টিমিডিয়া" এবং “রাদ ড্রামা” এর ব্যানারে ৮টি নাটক- হ্রদ মাঝারে, ঈদের জামা, সাধারণ মেয়ে, ময়মনসিংহের ময়ুরী, জোরা বৌ এর সংসার, সংসারের বন্ধন, ডিবোর্সি বোনের সংসার, খোদার পরে মা প্রযোজনা করেন যা একে একে দর্শকদের জন্য প্রকাশ করা হচ্ছে।
বোরহানের কাছে জানতে চাওয়া:
১. ইনভেস্ট করার অনেক জায়গা থাকা সত্যেও মিডিয়াকে কেনো বেছে নেওয়া?
আমার দ্বারা অন্যান্যদের বোঝাতে চাই, মিডিয়া কোনো খারাপ জায়গা নয় বরং সুষ্ঠ এবং সামাজিক কাজ দিয়ে এখানেও ব্যাবসা করে টিকে থাকা সম্ভব। আমি চাই অন্যান্য সবাই যেনো মিডার প্রতি উৎসাহিত হয় এবং বাংলা ইন্ড্রাস্টিকে আরো ভালোর পথে অগ্রসর করতে সহযোগিতা করে।
২.ভবিষ্যতে চলচিত্র বানানোর পরিকল্পনা আছে?
চলচ্চিত্র নিশ্চয়ই একটি জাতীয় সংস্কৃতি এবং গল্পকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরে। একইভাবে আমিও চাই আমার বাংলা সংস্কৃতি বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক। যদি ইনভেস্ট রিটার্নের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা থাকে তবে নিশ্চয়ই আমি চলচ্চিত্র বানাবো।
৩.যেহেতু ছেলের নামে প্রযোজনা সংস্থা তবে ছেলেকে নায়ক বানানোর কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
সত্যিকার অর্থে এটা ভিত্তি করে ছেলে অর্থাৎ রাদ এর ইচ্ছের উপর। কেননা আমি চাইলাম কিন্তু তার মনে চাচ্ছে না তাহলে তার স্বাধীনতার উপর আমার হস্তক্ষেপ হলো আর যেটা নিশ্চয়ই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না বলে আমার বিশ্বাস। আমি বাবা হিসেব বরাবরই চাই সে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে প্রতিষ্ঠিত হোক।
৪.দীর্ঘদিন ধরে নাটকে বানাচ্ছেন, আগামিতে বেতিক্রমভাবে নাটক উপস্থাপনের জন্য কিছু চিন্তা করছেন কি?
আমি বরাবরই চাই আমার নাটকের দ্বারা সমাজের প্রতিটি মানুষের দায়বদ্ধতা বাড়ুক এবং নাটকের চিত্রনাট্য দেখে সমাজ আরো ভালো দিকে অগ্রসর হোক।
৫.কলাকৌশুলীদের কাছে কিরুপ প্রত্যাশার আহ্বান?
ডিরেক্টরদের কাছে প্রত্যাশা, সর্বোপরি কথার সাথে কাজে মিল রেখে গাছ বাঁচিয়ে ফল খাওয়া। অন্যান্য আর্টিস্টদের সাথে শ্রদ্ধাশীল আচরণ করা এবং নতুনদের সুযোগ করে দেওয়া একইসাথে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। আর্টিস্টদের কাছে প্রত্যাশা, নিজের কাজটাকে সন্তানের মতো মনে করা এবং কাজের প্রতি দায়িত্ব রাখা। শুটিং শিডিউলের প্রতি ১০০% কমিটমেন্ট হওয়া এবং অন্যান্য কো-আর্টিস্টদের এর প্রতি বিনোয়ী হওয়া।
বোরহান ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ থানার রাখাল গাছি (চাঁদপাড়া) গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। পিতা- মো: সুলতান আলী (অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী)মাতা: মোসাম্মত চেয়ারন নেসা (গৃহিণী)। ৪ ভাই এবং ৩ বোনের মাঝে তিনিই ছোট। বর্তমানে তিনি আমেরিকায় তার পুরো পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।