অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৫ নভেম্বার ২০২৫, সময়ঃ ০১:১৯
রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমনকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন লিমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ব্যক্তিগত সম্পর্ক, আর্থিক লেনদেন ও জটিল দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা করছে তদন্তকারী সংস্থা। রাজশাহীর ডাবতলা এলাকার বিচারকের ভাড়া বাসায় গত ১৩ নভেম্বর ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। হঠাৎ বাসায় ঢুকে তাওসিফ রহমান সুমনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে লিমন মিয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তি। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হন বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার, যিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গ্রেপ্তারকৃত লিমন মিয়ার বাড়ি গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের মদনের পাড়ায়। তিনি এইচ এম ছোলায়মান হোসেন শহীদের ছেলে। উচ্চমাধ্যমিক শেষে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ৭–৮ বছর চাকরির পর ২০১৮ সালে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় বালুবাণিজ্য, অন্যান্য ব্যবসা এবং শেয়ারবাজারে সক্রিয় ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি ‘জিয়া সাইবার সোর্স’ নামে একটি সংগঠনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন।
বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহারের বাবার বাড়ি গাইবান্ধা শহরের এটেস্টেটপাড়ায়। একই জেলার হওয়ায় তাসমিন নাহারের সঙ্গে লিমনের পরিচয় তৈরি হয় এবং ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত সম্পর্কও গড়ে ওঠে। পারিবারিক সূত্র জানায়, লিমন নাহারের কাছ থেকে বারবার আর্থিক সহায়তা চাইতেন এবং না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে হুমকিও দিতেন।
তদন্তে জানা যায়, ঘটনার মাত্র এক সপ্তাহ আগে—৬ নভেম্বর—তাসমিন নাহার সিলেটের জালালাবাদ থানায় লিমনের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গ্রেপ্তারের পর প্রকাশিত ভিডিও বার্তায় লিমন দাবি করেন, তাদের সম্পর্ক পাঁচ বছর ধরে চলছিল এবং পরিচয় হয়েছিল কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান জানান, হত্যাকাণ্ডে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, আর্থিক লেনদেন বা সম্পর্কের জটিলতা জড়িত থাকতে পারে। তদন্ত চলছে এবং সব দিকগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ঘটনার পর রাজশাহীর পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোক ও উদ্বেগের ছায়া। তদন্ত শেষে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ