অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১২ নভেম্বার ২০২৫, সময়ঃ ০৬:৩৪
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বিকেলের প্রাণবন্ত মাঠ মুহূর্তেই স্তব্ধ হয়ে যায় মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে। ফুটবল খেলতে গিয়ে খেলার মাঝপথেই প্রাণ হারান ইনস্টিটিউটটির মেকানিক্যাল টেকনোলজির ষষ্ঠ পর্বের শিক্ষার্থী বিজয় দত্ত (২৯)।
সহপাঠীদের সঙ্গে খেলতে নেমেছিলেন বিজয়। খেলার শেষ মুহূর্তে হঠাৎ করে তিনি বলেন, “আমার কেমন জানি লাগছে,” এরপরই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে বন্ধুরা ভেবেছিল, হয়তো গরমে মাথা ঘুরে পড়েছেন। কিন্তু দ্রুতই তারা বুঝতে পারেন, পরিস্থিতি গুরুতর। সহপাঠীরা তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়, সেখান থেকে পাঠানো হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েই বিজয়ের মৃত্যু হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করিডোরে তখন নেমে আসে নিস্তব্ধতা। বাতাস ভারী হয়ে ওঠে বন্ধু ও স্বজনদের কান্নায়। কয়েক ঘণ্টা আগেও যে তরুণটি মাঠে হাসিমুখে খেলছিল, সে এখন নিথর দেহে শুয়ে।
বিজয়ের মামাতো ভাই বিধান মিত্র বলেন,
“বিজয় ছোটবেলা থেকেই প্রাণবন্ত ছিল। সবার মুখে হাসি ফোটাত, কখনো কাউকে কষ্ট দিত না। সকালে ফোনে কথা হয়েছিল ওর সঙ্গে—ভাবতেই পারিনি, বিকেলে এমন খবর শুনব।”
পিসিতোবাবু কাজল কান্তি দাশ বলেন,
“সকাল থেকে ক্লাস করেছিল সে। বিকেলে খেলতে গিয়ে হঠাৎ বলল, ‘আমার কেমন জানি লাগছে।’ তারপরই মাটিতে পড়ে যায়। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও আর ফেরেনি।”
বিজয়ের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটজুড়ে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। সহপাঠীরা কেউ কাঁদছে, কেউ নীরবে বসে আছে মাঠের এক কোণে—যে মাঠে কিছুক্ষণ আগেই হাসছিল বিজয়। তারা বলছে,
“বিজয় শুধু ভালো ছাত্রই না, খুব প্রাণবন্ত একজন মানুষ ছিল। ওর হাসিই ছিল সবার প্রাণ।”
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. কামাল হোসেন বলেন,
“তার এমন অকালে চলে যাওয়া অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”
বিজয়ের অকাল মৃত্যুতে ক্যাম্পাসে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, বন্ধুরা হারিয়েছে তাদের প্রিয় মুখ—যে মুখ ছিল প্রাণবন্ত এক বিকেলের প্রতীক।
© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ