ছয় বছর পর বসানো হল স্প্যান, ডিসেম্বরেই খুলছে স্বপ্নের গোমা সেতু


বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদি ও দুধল ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। সব গার্ডার ও পিলার বসে যাওয়ার পরও মাঝের দুটি স্প্যান না থাকায় এতদিন চলাচলের অযোগ্য ছিল রাঙামাটি নদীর গোমা সেতু। অবশেষে মঙ্গলবার একটি স্প্যান বসানো হয়েছে, আরেকটি বৃহস্পতিবার স্থাপন করা হলে খুলে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষের যোগাযোগের নতুন দ্বার।

২০১৮ সালে শুরু হওয়া দুই হাজার ৫৪০ ফুট দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল তিন বছরের মধ্যে। কিন্তু নানাবিধ জটিলতায় ছয় বছর পেরিয়ে গেছে, ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা—যা প্রাথমিক প্রাক্কলনের চেয়ে ৩৪ কোটি বেশি।

এদিকে এখনো একমাত্র ফেরির ওপর নির্ভর করে পারাপার হতে হচ্ছে নদীপারের মানুষদের। প্রতি ঘণ্টায় একবার ফেরি চলায় দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। অনেক সময় ফেরি বন্ধ থাকলে ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়।

দুধল ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, “রোগী অসুস্থ হলে সহজে এপার থেকে ওপারে নেওয়া যায় না।” অপরজনের ভাষায়, “ফেরি গেলে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়, সেতু থাকলে দুই মিনিটেই যাওয়া যেত।”

সেতুর উচ্চতা নিয়ে দ্বন্দ্বই বিলম্বের প্রধান কারণ ছিল। ২০১৯ সালের ৮ মে বিআইডাব্লিউটিএ নতুন চিঠিতে আগের অনুমোদন বাতিল করে জানায়, রাঙামাটি নদী এখন দ্বিতীয় শ্রেণির নৌপথ—বড় নৌযান চলাচল করবে, তাই সেতুর উচ্চতা বাড়িয়ে ১২.২০ মিটার করতে হবে। এতে শুরু হয় নকশা সংশোধন ও অনুমোদনের দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ২০২২ সালের ১৪ জুন উচ্চতা-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হলে আবার কাজ শুরু হয়।

সওজের তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ে সেতুর ৪৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু নকশা পরিবর্তন, জমি অধিগ্রহণ ও বাজেট পুনর্নির্ধারণে কেটে যায় আরও দুই বছর। সম্প্রতি একনেক সভায় সংশোধিত নকশা অনুমোদনের পর প্রকল্পে আবার গতি এসেছে।

বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, “নদীর ধারা পরিবর্তন ও জমি অধিগ্রহণের কারণে বারবার নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে। এখন কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। মঙ্গলবার একটি স্প্যান বসানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় স্প্যানটি বসানো হবে। আশা করি ডিসেম্বরের মধ্যেই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া যাবে।”

সেতুটি চালু হলে বরিশাল সদর, বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে যাতায়াত, চিকিৎসা, বাণিজ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদ স্থানীয়দের


সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মানিক

নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ রহমত উল্লাহ দেওয়ান

ফোনঃ ০১৭১১৩৯১১৩০

যোগাযোগঃ ঠিকানাঃ উত্তর ইসলামপুর, হাজী বাড়ী (তিন রাস্তার মোড়) মুন্সিগঞ্জ-১৫০০।

© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ