অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৮ অক্টবার ২০২৫, সময়ঃ ০১:১২
বাংলাদেশকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য করাচি বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের মতে, এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের জন্য একটি বিকল্প সমুদ্র রুট উন্মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংযোগ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও জোরদার হবে।
আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকে এ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত হতে পারে। প্রায় দুই দশক পর এই বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি) ও পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং কর্পোরেশনের (পিএনএসসি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের বিষয়ও আলোচনায় থাকবে।
অবগত কর্মকর্তাদের মতে, পাকিস্তানের এই প্রস্তাবটি চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে চীন থেকে পণ্য এনে করাচির মাধ্যমে বাংলাদেশে বা বাংলাদেশ থেকে চীনে পাঠানো সহজ হবে।
গত বছরের নভেম্বরে করাচি বন্দর থেকে চট্টগ্রামে সরাসরি প্রথম কার্গো জাহাজ পৌঁছায়, যা ছিল পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পর দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সামুদ্রিক যোগাযোগের সূচনা। এরপর পাকিস্তান সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের আগ্রহ প্রকাশ করে।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন,
“জাহাজ চলাচল ও বন্দর ব্যবহারের প্রস্তাবে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,
“প্রায় ১৫ বছরের রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক এখন অনুকূলে। পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় অর্থনীতি, আর বাংলাদেশ দ্রুত বর্ধনশীল দেশ। করাচি বন্দরের সঙ্গে সরাসরি শিপিং লাইন চালু হলে বাংলাদেশের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।”
বর্তমানে দুই দেশের বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার, তবে বাংলাদেশের রপ্তানি এখনো সীমিত। বিশেষভাবে তৈরি পোশাক, লেদার, এগ্রো-প্রসেসিং, আইটি ও ডিজিটাল সেবা খাতে পাকিস্তানের বাজারে প্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে।
ড. রিয়াজ বলেন,
“করাচি বন্দর ব্যবহার করে সরাসরি রপ্তানি চালু হলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য বাজারেও প্রবেশ সহজ হবে। পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল চালু হলে খরচ ও সময় সাশ্রয় হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার বড় অর্থনৈতিক বাজার হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বাজার বহুমুখীকরণের অন্যতম ক্ষেত্র হতে পারে। করাচি বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি সম্প্রসারণের সঙ্গে ব্যবসা ও টুরিজমও বাড়বে।”
© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ