“রাজশাহীতে রেলওয়ে ক্রয়ে আড়াই কোটি টাকার অনিয়ম, সাবেক-বর্তমান ১৮ কর্মকর্তা অভিযুক্ত”


রাজশাহীতে রেলওয়ের (পশ্চিমাঞ্চল) প্রায় আড়াই কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ১৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে রাজশাহীর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

 

দুদক জানায়, রেলওয়ের জন্য প্রতিটি তালা কেনার ক্ষেত্রে ঠিকাদারকে ৫ হাজার ৫৯০ টাকা প্রদান করা হয়েছিল, যেখানে প্রকৃত বাজারদর মাত্র ১৭৩ টাকা। শুধু তালা কেনাকাটিতেই ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৪০০ টাকা অনিয়ম হয়েছে। এছাড়া ভিআইপি পর্দা কেনায় ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ টাকা এবং অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে এক কোটি ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৪৪৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে।

 

মামলায় ১৮ জন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম, সাবেক সিওএস (পশ্চিম) মো. খায়রুল আলম, সাবেক সিওএস (পশ্চিম) মো. বেলাল হোসেন সরকার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (পশ্চিম) মো. মজিবুর রহমান, সাবেক এসিওএস মো. জাহিদ কাওছার, সাবেক ডেপুটি সিসিএম ফুয়াদ হোসেন আনন্দ, সাবেক ডিএফএ শ্যামলী রাণী রায়, বর্তমান সিওএস (পূর্ব) মো. আলামিন তালুকদার, সাবেক ডিএফএ (অর্থ, পশ্চিম) মো. আলমগীর হোসেন, সাবেক সিওপিএস (পশ্চিম) এএমএম শাহনেওয়াজ, সাবেক এফএঅ্যান্ডসিএও (পশ্চিম) মো. শরিফুল ইসলাম, সাবেক ডেপুটি সিওপিএস (পশ্চিম) হাসিনা খাতুন, সাবেক এফএঅ্যান্ডসিএও (পশ্চিম) মো. মসিহ উল হাসান, সাবেক এসিসিএম (পশ্চিম) শেখ আব্দুল জব্বার, সাবেক অতিরিক্ত এফএঅ্যান্ডসিএও (পশ্চিম) মো. গোলাম রব্বানী, সাবেক অতিরিক্ত এফএ অ্যান্ড সিএও গোলাম রহমান, সাবেক এফএঅ্যান্ডসিও (পশ্চিম) সরোজ কান্তি দেব এবং সাবেক সিসিএম (পশ্চিম) মিহির কান্তি গুহ।

 

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিওএস দফতরের মাধ্যমে তালা, বালতি, বাঁশি, ঝান্ডা, ভিআইপি পর্দা, লাগেজ ফিতা, ওয়াগন কার্ড, চেয়ার, ট্রলিসহ ১৭ ধরনের পণ্য ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম ঘটেছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি জানায়, বাজার যাচাই না করে অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। এতে প্রাক্কলিত বাজারদরের তুলনায় ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে দুই কোটি ১৮ লাখ টাকারও বেশি সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

 

দুদকের কর্মকর্তারা বলেন, প্রাক্কলন ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করে প্রকৃত মূল্যের তুলনায় ৩৩ গুণ বেশি দামে ক্রয়ের সুপারিশ করেছিলেন। অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজশে অর্থ আত্মসাতের কাজে যুক্ত ছিলেন, যা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

 

মামলার বাদী দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “মামলার তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ দিন সময় বরাদ্দ থাকবে। এখনও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। কমিশন যাকে দায়িত্ব দেবে, সেই কর্মকর্তা তদন্ত করবেন।”


সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মানিক

নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ রহমত উল্লাহ দেওয়ান

ফোনঃ ০১৭১১৩৯১১৩০

যোগাযোগঃ ঠিকানাঃ উত্তর ইসলামপুর, হাজী বাড়ী (তিন রাস্তার মোড়) মুন্সিগঞ্জ-১৫০০।

© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ