অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১২ অক্টবার ২০২৫, সময়ঃ ০৩:৩৯
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং আকাশপথে যাত্রী পরিবহন নির্বিঘ্ন রাখতে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। বিমানবন্দরে গড়ে তোলা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়, পাশাপাশি বন্দর এলাকায় সব ধরনের মিছিল, সমাবেশ ও অতিরিক্ত জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা তদারক করছে বিমানবাহিনীর নেতৃত্বাধীন একটি টাস্কফোর্স। বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন,
“বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। আমাদের ফ্লাইট সেফটি ইমপ্লিমেন্টেশন সেন্টারও রয়েছে। প্রতিটি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।”
পতেঙ্গা এলাকায় বিমানবন্দরের অবস্থান হওয়ায় আশপাশে বসতি এলাকা রয়েছে। সীমানা প্রাচীরের নিরাপত্তা জোরদারে মোতায়েন করা হয়েছে আমর্ড ব্যাটালিয়ন পুলিশ ও আনসার সদস্যদের। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল জানান,
“নিরাপত্তা পেট্রোলিং ও টহলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সব নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি কমিটির মাধ্যমে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) বন্দর এলাকায় ৩০ দিনের জন্য সব ধরনের মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বারিক বিল্ডিং, নিমতলা বিশ্বরোড, কাস্টমস মোড় ও সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
সিএমপির উপকমিশনার কবীর আহমেদ বলেন,
“বন্দরকেন্দ্রিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে—যেমন বারিক বিল্ডিং ও তিন নম্বর জেটি গেট। এসব স্থানে যদি কোনো মিছিল বা সমাবেশ হয়, তাহলে বন্দরে যানবাহন প্রবেশ ও বের হওয়া ব্যাহত হয়।”
নগরীর আগ্রাবাদ থেকে পতেঙ্গা উপকূল পর্যন্ত প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে বন্দর ও বিমানবন্দর ছাড়াও দুটি সরকারি ইপিজেড, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার তেল স্থাপনা এবং সরকারি-বেসরকারি তেল শোধনাগার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অঞ্চলটিকে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
এদিকে সম্ভাব্য সাইবার হামলা প্রতিরোধে দেশের সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। সংস্থাটি ১০ দফা নির্দেশনা জারি করে সংশ্লিষ্টদের শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার, সন্দেহজনক ই-মেইল বা লিঙ্ক এড়িয়ে চলা, নিয়মিত সফটওয়্যার ও অ্যান্টিভাইরাস আপডেট রাখা এবং মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (এমএফএ) সক্রিয় রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
বেবিচকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো সাইবার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে বেবিচকের সিএএবি সার্ট টিম, আইটি বিভাগ এবং জাতীয় সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমকে অবহিত করতে হবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চেক-ইন ও বোর্ডিং সিস্টেম সাপোর্ট দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার কারণে ইউরোপের বেশ কয়েকটি বড় বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এতে লন্ডনের হিথরো, ব্রাসেলস, বার্লিন, ডাবলিন এবং কর্ক বিমানবন্দর ক্ষতির শিকার হয়েছে। এ প্রেক্ষিতেই বাংলাদেশে আগাম সতর্কতা জারি করেছে বেবিচক।
© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ