যুবলীগ নেতাকে ছাড়াতে থানায় বিএনপি নেতারা


শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানা থেকে যুবলীগ নেতাকে ছাড়াতে এসেছিলেন বিএনপির কিছু নেতা। এসময় হট্টগোলের দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে তাদের পিটুনির শিকার হয়েছেন তিন সাংবাদিক। শনিবার রাতে সখিপুর থানায় এ ঘটনা ঘটে। 

হামলায় আহত সাংবাদিকরা হলেন– দৈনিক নয়া দিগন্তের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার রাসেল শিকদার, কালবেলার ভেদরগঞ্জ প্রতিনিধি শাহিন আহমেদ ও এশিয়ান টেলিভিশনের প্রতিনিধি রুহুল আমীন জুয়েল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী যুবলীগের ভেদরগঞ্জের উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেনকে আটক করে। তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় নেতাকর্মীদের নিয়ে আসেন সখিপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সরদার, ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা জালাল খান, উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মাল, যুবদল নেতা ফয়সাল সরদার। তারা আক্তারকে ছেড়ে দিতে বললে পুলিশে সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এ সময় সে ঘটনার ছবি তুলছিলেন সাংবাদিকরা। 

পুলিশ বিএনপি নেতাদের কথায় যুবলীগ নেতাকে ছাড়েনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। মারধর করে বিএনপি নেতারা তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সাংবাদিকরা ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। 

আহত সাংবাদিক রাসেল শিকদারের ভাষ্য, ‘তথ্য সংগ্রহ করে আমি থানার ভেতর থেকে বের হয়ে ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ মাজহারুল ইসলাম সরদারসহ কয়েকজন আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। তারা মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ও মারধর করেন।’

রুহুল আমীন জুয়েল বলেন, পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থানার মাঠে ছিলেন। হঠাৎ বিএনপি নেতা ও তাঁর লোকজন হামলা চালান। তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে কিল-ঘুসি মারা হয়। তাঁর প্রশ্ন, ‘থানার ভেতরে নিরাপত্তা না থাকলে আমরা কোথায় নিরাপত্তা পাব?’

বিএনপি নেতা মাজহারুল ইসলাম সরদারের কাছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আপনি কোথায় আছেন? আসেন চা খাইয়া যান, ঘটনা জেনে যান।’ হামলার প্রশ্নে উত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন। একাধিক প্রশ্নেও উত্তর দেননি।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সখিপুর থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ঢালী বলেন, সুষ্ঠু বিচার না হলে বারবার সাংবাদিকরা আক্রান্ত হবেন। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করছি। 

শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি। আওয়ামী লীগের দোসরদের পক্ষে বিএনপির কেউ থানায় গিয়ে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে শনিবার সন্ধ্যায় এক যুবলীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে ছাড়াতে এসেছিলেন বিএনপি নেতা মাজহারুল ইসলাম। আমি তাঁকে বলেছি, তথ্য যাচাই-বাছাই ছাড়া ছাড়তে পারব না। এটা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছেন। এটা দুঃখজনক। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’


সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মানিক

নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ রহমত উল্লাহ দেওয়ান

ফোনঃ ০১৭১১৩৯১১৩০

যোগাযোগঃ ঠিকানাঃ উত্তর ইসলামপুর, হাজী বাড়ী (তিন রাস্তার মোড়) মুন্সিগঞ্জ-১৫০০।

© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ