অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বার ২০২৫, সময়ঃ ০৬:৫৫
বিগত বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে আসছেন যে, মারাত্মক এইচ৫এন১ বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস যেকোনো সময় পাখি থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট সৃষ্টি করতে পারে। সম্প্রতি ভারতীয় গবেষকদের এক নতুন গবেষণায় এই ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়াবহ চিত্র উদঘাটন হয়েছে। তারা দেখেছেন, ঠিক কোন পর্যায়ে সংক্রমণ মহামারি আকারে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। ২০০৩ থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বে ৯৯০ জন মানুষের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যার মধ্যে ৪৭৫ জন মারা গেছেন। মৃত্যুহার প্রায় ৪৮ শতাংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোটি কোটি পাখি ও শত শত দুগ্ধ খামারে ভাইরাসটি ছড়িয়ে আছে। ভারতেও এ বছর বাঘ ও চিতাবাঘ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
গবেষকরা আশোকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ভারতসিম’ নামে একটি কম্পিউটার মডেল তৈরি করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, সংক্রমণ মানুষের শরীরে নীরবে শুরু হতে পারে। প্রথমে কোনো খামারকর্মী বা পাখির বাজারে কাজ করা ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে শুরু করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
মডেল অনুযায়ী, যদি সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ২–১০ জনের মধ্যে থাকে, তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা ১০ ছাড়ালে সংক্রমণ সমাজে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। গবেষণায় তামিলনাডুর একটি পোলট্রি সমৃদ্ধ গ্রামকে মডেল হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাস পাখির মধ্যে থাকার সময় পাখি নিধন করা সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। মানুষ আক্রান্ত হলে দ্রুত আইসোলেশন ও কঠোর কোয়ারেন্টিন প্রয়োজন। সংক্রমণের তৃতীয় ধাপ শুরু হলে লকডাউনের মতো কঠোর ব্যবস্থা নিতে হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও কিছু অ্যান্টিভাইরাল ও টিকা রয়েছে, তবুও ভাইরাস সুপার স্প্রেডার হলে ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লুর চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ