শিমুলিয়া ঘাটে বসতভিটা রক্ষার আন্দোলনে উত্তেজনা: ভিডিও ধারণ করায় দুই শিক্ষার্থীকে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পোর্ট অফিসারের বিরুদ্ধে


মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় চরভূমি রক্ষা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রানি গাঁও মৌজার শতাধিক মালিকানাধীন জমি বিআইডব্লিউটিএ’র নাম করে কৌশলে ড্রেজারের মাধ্যমে কেটে নেওয়ার  প্রস্তুতির অভিযোগ জমির মালিকদের।এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ওই জমির স্থাপিত পিলার ও গাছপালা উপড়ে ফেলার সময় ভিডিও ধারণ করায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীকে মারধর ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে আটক করে রাখার অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খানের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রানি গাঁও মৌজার আরএস দাগ নং—৪২৬, ৪২৫, ৪২৪, ৪১২, ৪১৩, ৪১৪, ৪১৫, ৪২৩, ৪১৬, ৪২৭, ৪২৮, ৪২৯, ৪৩০, ৩৩৭, ৪৩১, ৪৩২, ৩৩৮, ৩৩৬ নম্বর খতিয়ানভুক্ত জমিগুলো বহু বছর আগে থেকেই স্থানীয়দের বসতভিটা ছিল। এখানে যখন শিমুলিয়া ঘাট হয় তখন এখানে খনন করে নৌজান চলাচলের রুট করা হয়। জনগণের চলাচলের স্বার্থে  তখন জমির মালিকরা কোন বাধা দেয়নি কিন্তু, এখন পদ্মা সেতু চালুর পর নৌপথের চাপ কমায় মালিকেরা তাদের পুরনো জমি চাষাবাদ ও বসবাস উপযোগী করে তোলেন। তারা দাবি করেন, জমির সকল কাগজপত্র, হাল-সন ও খাজনা নিয়মিত পরিশোধ করা রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয়  বালু–ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের স্বার্থে পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদ খান কৌশলে নতুন টলার চলাচলের নাম করে চ্যানেল খননের অনুমতি দেখিয়ে শতাধিক একর মালিকানা জমি ড্রেজারের মাধ্যমে কেটে বিক্রির পাঁয়তারা করছেন। স্থানীয়রা জানান, এই মাটি বিক্রি করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা চলছে, আর সেই কারণেই মালিকদের পিলার ও গাছপালা অপসারণ করা হয়।
এ ঘটনার সময় ভিডিও ধারণ করছিল কাজির পাগলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শামীম (১৪) ও হলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুর জালাল (১৬)। অভিযোগ অনুযায়ী, পোর্ট অফিসার নিজেই দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে মারধর করেন এবং তাদের মোবাইল ফোন জব্দ করেন। পরে রাতের দিকে মোবাইল ফেরত দিলেও সমস্ত ভিডিও ডিলিট করে শিক্ষার্থীদের নাম–ঠিকানা লিখে ‘মামলার প্রস্তুত থাকার’ হুমকি দেন।
এ বিষয়ে শিমুলিয়া ঘাটের পোর্ট অফিসার নেওয়াজ মোহাম্মদকে মোবাইল ফোনে জিজ্ঞেস করলে মারধরের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন কিন্তু মোবাইল জব্দ করার বিষয়টি স্বীকার করেন। 
ঘটনার পর স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা জানান, জমি রক্ষার বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ হেড অফিস, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে শিশু শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি কোনভাবেই মানা হবে না বলে স্থানীয়রা হুঁশিয়ারি দেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “আমাদের শত বছরের বসতভিটা বারবার সিন্ডিকেটের হাতে ধ্বংস হতে দেবো না। প্রয়োজনে মানববন্ধন ও বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। সন্তানদের ওপর হামলা করে ভয় দেখিয়ে আমাদের জমি দখল করতে দেওয়া হবে না।
শিক্ষার্থীদের মারধর ও জমি দখলচেষ্টার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জমির মালিক ও সাধারণ মানুষ।


সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মানিক

নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ রহমত উল্লাহ দেওয়ান

ফোনঃ ০১৭১১৩৯১১৩০

যোগাযোগঃ ঠিকানাঃ উত্তর ইসলামপুর, হাজী বাড়ী (তিন রাস্তার মোড়) মুন্সিগঞ্জ-১৫০০।

© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ