খালেদা জিয়ার সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থা—তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ঘিরে জোর আলোচনার ঝড়


দেশজুড়ে উদ্বেগ—খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রার্থনায় জাতি ঐক্যবদ্ধ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগে সারাদেশ। তার দ্রুত রোগমুক্তির প্রার্থনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জামায়াতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ দোয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গুরতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ একাধিক জটিল রোগে ভুগছেন।


মায়ের বিপর্যস্ত অবস্থায় সন্তানের আকুতি—“স্নেহস্পর্শের তীব্র আকাঙ্ক্ষা”

লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান একটি পোস্টে আবেগঘন ভাষায় লিখেছেন—
“এমন সংকটকালে মায়ের স্নেহস্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু এটি এখন আমার একক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।”

দলীয় সূত্র বলছে, অন্তত পাঁচটি প্রধান বিষয় তারেক রহমানের দেশে ফিরতে দেরির অন্যতম কারণ—

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিবেচনা

স্পর্শকাতর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা

পাসপোর্ট জটিলতা

ট্রাভেল পাস ইস্যু

রাজনৈতিক হিসাব–নিকাশ ও নির্বাচন ঘিরে পরিস্থিতি


নির্বাচন ও চিকিৎসা—দুটি অজানা সমীকরণ

তারেক রহমান ঠিক কবে দেশে ফিরবেন—এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার ঝড়। দলীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন:
“খুব শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন।”

একই কথা জানিয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল—
“তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তিনি শিগগিরই আসবেন।”

তবে দলীয় আরেক সূত্র জানায়—
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা-অবস্থার উন্নতি ও বিদেশে নেওয়ার অনুমতি—এই দুই বিষয়ই তারেক রহমানের ফেরা চূড়ান্ত করবে।


মির্জা ফখরুল: ‘মায়ের চিকিৎসার অবস্থাই তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে’

নয়াপল্টনে যুবদলের দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব বলেন—
“চেয়ারপারসনকে বিদেশে নেওয়া সম্ভব হলে তারেক রহমান দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন।”


লন্ডন থেকে ঢাকায় চিকিৎসা সমন্বয়—তারেক জোবায়দার সার্বক্ষণিক তদারকি

দলীয় সূত্র জানায়, বিদেশী ও দেশী চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল টিমের সঙ্গে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী কার্ডিওলজিস্ট ডা. জোবায়দা রহমান সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।
তারা ‘লন্ডন ক্লিনিক’-এর প্রফেসর প্যাট্টিক কেনেডি ও জেনিফার ক্রসসহ বিশেষজ্ঞদের সাথে সমন্বয় করে চিকিৎসা বোর্ডকে নিয়মিত তথ্য দিচ্ছেন।


চিকিৎসা বোর্ড: “চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রোগীর অবস্থা ও বোর্ডের মতামতের ওপর নির্ভরশীল”

ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন—

ইউকে থেকে বিশেষজ্ঞরা এসে খালেদা জিয়াকে পুনর্মূল্যায়ন করছেন

প্রয়োজন হলে বিদেশে রেফার্ড করা হবে

পরিবারের কাছে সব প্রস্তুতি আছে, তবে সিদ্ধান্তের ভিত্তি রোগীর বর্তমান অবস্থা

এভারকেয়ারে বর্তমানে অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি–বিদেশি চিকিৎসকদের বড় টিম চিকিৎসা দিচ্ছেন।


বিদেশ যাত্রার প্রস্তুতি—কাতার আমীরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত

দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে—
খালেদা জিয়া ভ্রমণোপযোগী হলেই কাতার আমীরের প্রেরিত রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে লন্ডনে নেওয়া হবে।
ঢাকাস্থ কাতার দূতাবাসের মাধ্যমে এ নিয়ে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ সম্পন্ন হয়েছে।


পররাষ্ট্র উপদেষ্টা: “ট্রাভেল পাস চাইলেই দেওয়া হবে”

অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন—

তারেক রহমান এখনও ট্রাভেল পাস চাননি

চাইলে তা দ্রুত ইস্যু করা হবে

সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে


পূর্ব অভিজ্ঞতা—লন্ডন ক্লিনিকে ১১৭ দিনের চিকিৎসা

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসা নিয়েছিলেন ‘লন্ডন ক্লিনিক হসপিটালে’। সেখানে তার লিভারের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অপারেশন করা হয়। এ সময় তিনি পরিবারের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান।


শেষ কথা

মায়ের সংকটময় শারীরিক অবস্থা ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিল সমীকরণের মধ্যেই তারেক রহমানের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।
চিকিৎসক টিমের মূল্যায়ন, সরকারের সহযোগিতা, বিদেশে নেওয়ার অনুমতি—সবই মিলিয়ে সামনে আসছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দিন।

দেশবাসী এখন অপেক্ষায়—খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার।


সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মানিক

নির্বাহী সম্পাদকঃ মোঃ রহমত উল্লাহ দেওয়ান

ফোনঃ ০১৭১১৩৯১১৩০

যোগাযোগঃ ঠিকানাঃ উত্তর ইসলামপুর, হাজী বাড়ী (তিন রাস্তার মোড়) মুন্সিগঞ্জ-১৫০০।

© sangbad52 ২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সতর্কতাঃ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ