শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ হালনাগাদ করে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সোমবার (২৫ নভেম্বর) ঘোষিত এই নতুন বিধিমালায় পূর্বের নানা সীমাবদ্ধতা দূর করে বর্তমান বাস্তবতা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ঘাটতি বিবেচনায় নতুন নির্দেশনা যুক্ত করা হয়েছে।

পূর্বের বিধিমালায় শুধু ম্যাজিস্ট্রেটদের ক্ষমতা থাকায় জনবল সংকটে কার্যকর তদারকি ব্যাহত হচ্ছিল। এবার নতুন বিধানে ট্রাফিক সার্জেন্টের নিচের নয় এমন পুলিশ কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলেই শব্দদূষণ-সংক্রান্ত অপরাধে তাৎক্ষণিক জরিমানা আরোপ করতে পারবেন। মন্ত্রণালয়ের ধারণা, এতে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য গতি আসবে।

হর্ন ব্যবহারের অনিয়ন্ত্রিত বিস্তার শব্দদূষণের অন্যতম বড় উৎস। কিন্তু পূর্বের বিধিতে আমদানি, উৎপাদন, মজুদ বা বিক্রি সংক্রান্ত কোনো শাস্তির বিধান না থাকায় এ খাতে তদারকি দুর্বল ছিল। বিধিমালা ২০২৫-এ এ বিষয়ে স্পষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা যুক্ত হওয়ায় অবৈধ হর্ন নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন বিধিমালায় আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে—

লিখিত অনুমতি ছাড়া কোনো পাবলিক প্লেসে লাউডস্পিকার, মাইক, অ্যাম্প্লিফায়ার ও সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার নিষিদ্ধ।

প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে বনভোজন পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

সামাজিক অনুষ্ঠানে শব্দসীমা ৯০ ডেসিবল নির্ধারণ এবং অনুষ্ঠান রাত ৯টার মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা।

নীরব এলাকায় পটকা, আতশবাজি, হর্নসহ যেকোনো শব্দসৃষ্টিকারী পণ্য ব্যবহার নিষিদ্ধ।

রাত্রিকালীন নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হবে।

শিল্পকারখানা, জেনারেটর ও যানবাহনের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নতুন বিধান সংযোজন।

সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দণ্ড নির্ধারণ।

নতুন বিধিমালা প্রণয়নের আগে অংশীজনদের নিয়ে সভা-সেমিনার, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ এবং জনগণের মতামতের জন্য খসড়া ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বেস্ট প্র্যাকটিস যাচাই করে ২০০৬ সালের বিধিমালার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সংশোধন আনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২৫ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি “যুগান্তকারী পদক্ষেপ” হিসেবে ভূমিকা রাখবে।