শিরোনাম:

ভারতে শুরু হয়ে গিয়েছে জেন-জি বিক্ষোভ, বিজেপির কার্যালয় ধ্বংস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, দেশ আমার টিভি নিউজ
অফিস ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বার ২০২৫ | সময়ঃ ০৭:০০
photo

ভারতের হিমালয়াঞ্চল লাদাখে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভয়াবহ সহিংসতায় উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপির কার্যালয়ে আগুন দেওয়া এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত চারজন তরুণ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন বহু মানুষ।

গত ১৫ দিন ধরে চলা অনশন কর্মসূচির মধ্যে দুই প্রবীণ আন্দোলনকারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় লেহ শহরে দোকানপাট বন্ধের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু তরুণদের একাংশ মনে করে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনও লাভ হচ্ছে না—এই হতাশা থেকেই তারা রাস্তায় নামে আরও তীব্র প্রতিবাদে।

স্থানীয় আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের গুলিতেই প্রাণ গেছে বিক্ষোভকারীদের।

লাদাখিদের দাবি

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করে লাদাখকে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয়। তখন থেকেই লাদাখের মানুষের দাবি—

রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া,

সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় উত্তর-পূর্ব ভারতের মতো বিশেষ সাংবিধানিক অধিকার প্রদান।

লাদাখের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ তালিকাভুক্ত উপজাতি হওয়ায় তাদের এই দাবি দীর্ঘদিনের।

নেতাদের বক্তব্য

শিক্ষাবিদ ও পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক বলেন, “তরুণদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। চাকরি নেই, ভবিষ্যৎ নেই, আর সাংবিধানিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এটাই সমাজে অশান্তির বীজ।”

আন্দোলন সমন্বয়কারী জিগমেত পালজোর বুধবারের সহিংসতাকে লাদাখের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন বলে অভিহিত করে বলেন, “পাঁচ বছর ধরে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি শুনে মানুষ অতিষ্ঠ। যারা রাস্তায় নেমেছিল, তারা শহীদের মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য।”

সরকারি পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ওয়াংচুক তরুণদের ‘জেন জি বিপ্লব’ এবং ‘আরব বসন্ত’-এর মতো শব্দ ব্যবহার করে উসকানি দিচ্ছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, তিনি কখনোই হিংসার পক্ষে নন।

কৌশলগত সংকট

চীন সীমান্তবর্তী কৌশলগত এই অঞ্চলে ২০২০ সালে ভারত-চীন সেনাদের সংঘর্ষ হয়েছিল। এখন অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিদ্দিক ওয়াহিদ বলেন, “২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারই ফল এখন ঘরে ঘরে আগুন হয়ে ফিরছে। আগে ছিল কাশ্মীর, এখন লাদাখও সরকারের মাথাব্যথা।”

শেয়ার করুন