
Sign in
Sign in
Recover your password.
A password will be e-mailed to you.
বরগুনায় ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ক্রাইম রিপোর্টার:
ভাড়া বাসার মালিকের ছেলের যৌন হয়রানী ও মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে না পেরে বরগুনার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া সামিরা(১৪) নামের এক কিশোরী মায়ের কাছে চিঠি লিখে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
সোমবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার কলেজ রোডের খামার বাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাসার বাথরুম থেকে গলায় ফাঁস দেয়া কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কিশোরী সামিরা আত্মহত্যার জন্য অভিযুক্ত জামাল(৩২) কে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
নিহতের পরিবার ও স্থাণীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫/৬ মাস আগে নিহত সামিরার বাবার সাথে তার মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। দ্বিতীয় স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে বরগুনা সরকারি কলেজের উত্তর পাশে খামারবাড়ি সংলগ্ন আবুল বাশার মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকেন। পাশের বাসায় আবুল বাশারের ছেলে জামাল স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন।
স্থাণীয়রা জানান, সামিরা গোসলে গেলে জামাল প্রায়ই বাথরুমে উঁকি দিয়ে অশ্লীল ইঙ্গিত করতো। বিষয়টা সামিরা তার মা এবং জামালের স্ত্রীকে জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে জামাল সামিরার বিরুদ্ধে এলাকার বিভিন্ন মহলে অপবাদ ছড়িয়ে দেয়। নিহত সামিরার মা সুমী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, তার প্রথম স্বামী রফিকের সন্তান সামিরা। বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর বর্তমান স্বামী রাশেদের সাথে মেয়ে সামিরাকে নিয়ে আবুল বাশারের বাসায় ভাড়া থাকেন। বাসা মালিকের ছেলে জামাল হোসেনের স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্তেও প্রায়ই তার মেয়েকে উত্যক্ত করত। ইতোপূর্বে একাধিকবার সামিরাকে শারিরিক ভাবেও লাঞ্ছিত করেছেন অভিযুক্ত জামাল।
সুমী বেগম বলেন, শনিবার আমার মেয়ে সামিরা বাথরুমে গোসল করার সময় জামাল উকি মারলে পানি ছুড়ে মারে। এতে জামাল অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়। নিহতের মা আরও বলেন, কিছুদিন যাবত প্রতিবেশীরা সামিরা ও জামালের অনৈতিক সম্পর্কের কথা বলাবলি করছিলো। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বিষয়টা রবিবার রাতে জামালের বাবা বাসা মালিক আবুল বাশারকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলাম। গ্রামের বাড়িতে থাকায় তিনি বরগুনার বাসায় এসে ছেলে জামালকে শাসন করবেন বলে আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশী এক নারী বলেন, এলাকায় রটানো জামালের অনৈতিক সম্পর্কের কথা সামিরা অস্বীকার করলেও তার মা ছাড়া অন্য কেউ একথা মেনে নেয়নি। একমাত্র মা ছাড়া সবাই নিহত সামিরাকে গালমন্দ করত। আত্মহত্যার আগে সামিরা তার মায়ের কাছে চিঠিতে হুবহু যে বিষয়টা উল্লেখ করে লিখে রেখে গেছেন তা সত্য।
বরগুনার সদর সার্কেল মেহেদী হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের জানান, আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। এ বিষয়ে সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। উত্যক্তকারী একজনকে এলাকাবাসী পুলিশে সোপর্দ করেছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
