গজনবী বিপ্লব, নেত্রকোণা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার মদনে এক মাস ধরে সাতটি পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রাখার অভিযোগ ওঠেছে এক প্রভাবশালী প্রতিবেশীর বিরুদ্বে। ঘরের সামনে টিনের লম্বা বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় অবরুদ্ব অবস্থায় কষ্টে দিন যাপন করছেন সাতটি পরিবারের লোকজন।
এমন ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বারড়ী গ্রামের (সুতিয়ার পাড়)। বাড়ি থেকে বের হওয়ার বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় কলা গাছের ভেলায় পুকুরের মধ্যে দিয়ে চলাচল করছে ওই সাত পরিবারে লোকজন। উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বারড়ী (সুতিয়ায় পাড়) গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে নূর আমীনেরসাথে প্রতিবেশী মৃত শহীদ মিয়ার ছেলে সাদ্দামের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে এলাকায় কয়েক দফা সালিশি বৈঠক হলেও এর কোনো মীমাংসা হয়নি। এক মাস আগে গত বৈশাখ মাসে তাদের মধ্যে তর্কবির্তক হলে সাদ্দাম টিনের বেড়া দিয়ে তার বাড়ির পাশে ওই সাতটি পরিবারে লোকজনের যাতায়াতে একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেয়। বিকল্প অন্য কোন রাস্ত্ না থাকায় এই বর্ষায় পানিতে অবরুদ্ব অবস্থায় রয়েছেন ওই পরিবারের লোকজন।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার (১৪ জুন) সরজমিন বারড়ী গ্রামে গেলে টিনের বেড়া দিয়ে রাস্তা বন্ধ করার দৃশ্য চোখে পড়ে। এ সময় নূর আমীন বলেন, আমরা পাঁচ ভাই ও দুই চাচা মিলে একই বাড়িতে বসবাস করি। আমরা সবায় পেশায় অটোরিকশা চালক। পাশের বাড়ির সাদ্দামের সঙ্গে আমাদের বাড়ির সামনের পুকুর নিয়ে বিরোধ আছে। বৈশাখ মাসে সাদ্দামের সঙ্গে তর্ক হলে সে রাস্তা বন্ধ করে দেয়। যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় অটোরিকশা নিয়ে বাড়িতে আসতে পারি না। কলা গাছের ভেলা দিয়ে পুকুরের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করছি। আমার ভাই মিলনের অটোরিকশাটি বাড়িতে পারে না। তাই পাশের বাড়ির শামছুর বাড়িতে রাখতে হয়। ছোট ভাই রোকনের অটোরিকশা এক মাস ধরে ঘরেই পড়ে আছে। আয় রোজগাড়ের পথ বন্ধ। ঋণ নিয়ে রিকশা কিনেছিলাম। ঋণের টাকার চাপে তিনটি রিকশা বিক্রি করে দিয়েছি। এভাবে অবরুদ্ব অবস্থায় থাকলে কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব, আর কি দিয়ে চালাব পরিবার। এমন অবস্তা চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। রোজগার না থাকলে একদিন গ্রাম ছারতে হবে।
এই বিষয়ে কথা বলতে প্রতিবেশী সাদ্দামের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তার মা রেখা আক্তার ও সাদ্দামের ভাই সানোয়ার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা আছে। এ নিয়ে তারা আমাদের সঙ্গে প্রায় সময়েই ঝগড়া করে আবার আমাদের জায়গা দিয়ে অটোরিকশা আনা-নেওয়া করে। আমাদের নিজেদের জায়গায় আমরা বেড়া দিয়েছি তাদের জায়গায় তো দিইনি।’ তারা কোন দিকদিয়ে আনাগোনা করবে সেটা তাদের ব্যাপার। কাইটাইল ইউপি চেয়ারম্যান সাফায়াত উল্লাহ রয়েল বলেন, ‘নূর আমীন ও সাদ্দামের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তবে রাস্তা বেড়া দিয়েছে এমন বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করবো।’
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) উজ্জল কান্তি সরকার বলেন, ‘এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, বিষয়টি জেনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’