স্টাফ রিপোর্টার হাবিবঃ
নওগাঁর মান্দায় প্রসাদপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় এজাহার ভুক্ত চারজন আসামী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে, জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। রোবাবার বিকেল ৩টার সময় ২নং আমলী আদালত নওগাঁ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার বসাক এ নির্দেশ দেন।
আসামীরা হলো- প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এরশাদ আলী(৫০), সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তার(৪৫), সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানা (৩০) ও খাদেমুল ইসলাম (৫৫)।
আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন- অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ এবং রাষ্ট্রপক্ষের ছিলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশীদ। পরবর্তী শুনানী হবে আগামী ০৯/০৮/২০২১ ইং।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের দাওইল গ্রামের তদন্তে প্রাপ্ত গ্রেফতার দলিল লেখক সমিতির সদস্য মিজানুর রহমান নামে একজনকে আটক করে পুলিশ রোববার দুপুরে জেল হাজতে পাঠায়। বর্তমানে পাঁচজন আসামী রয়েছে জেলহাজতে।
উল্লেখ্য, নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতির সদস্যরা সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে দীর্ঘদিন থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় করে আসছে। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে হয়রানি শিকার ও জমি রেজিস্ট্রি বন্ধ করে দেন তারা। গত ৮জুন দৈনিক যুগান্তর ও জাগোনিউজের জেলা প্রতিনিধি আব্বাস আলীর বড় ভাই আসাদ আলী তার পারিবারিক জমি রেজিস্ট্রি করতে প্রসাদপুর দলিল লেখক সমিতিতে যান। সেখানে দলিল লেখকের সাধারন সম্পাদকের বাবুল আক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি দলিল ১২ লাখ টাকা মূল্যে করতে চান। যেখানে ১০ দশমিক ৫ টাকা হারে ১২ লাখ টাকার দলিলে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকা দাবী করে। যা সরকারি মূল্যের চাইতে অতিরিক্ত চাঁদা দাবী করা হয়।
বিষয়টি আসাদ আলী তার ছোট ভাই সাংবাদিক আব্বাস আলীকে জানালে তিনি স্বশরীরে সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তারের সঙ্গে দেখা করে এতো টাকা কেন লাগবে এবং সরকার কত টাকা বেঁধে দিয়েছে জানতে চাইলে,কোন প্রকার কম হবে না বলে সে সাফ জানিয়ে দেয়। দলিল রেজিস্ট্রিতে সরকারি খরচের বিষয় জানতে চাইলে তারা আব্বাস আলীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারমুখী আচরণ করে দলিল লেখক সমিতি চত্বর থেকে বের করে দেয়। পরে তিনি বিষয়টি সাব-রেজিস্ট্রিারের সঙ্গে আলোচনা করতে তার এজলাস কক্ষে যান।
এসময় দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক বাবুল আক্তার ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলামিন রানার নেতৃত্বে ১০-১২ জন এজলাস কক্ষ থেকে টেনে হিচড়ে বের করে বারান্দায় সাংবাদিক আব্বাস আলীকে কিলঘুষি মেরে আহত করে, তার কাছে থাকা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। যার মধ্য জমি রেজিস্ট্রি বাবদ নগদ তিন লক্ষ টাকা, ভিডিও ক্যামেরা ও একটি ল্যাপটপ ছিল। পরে কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্বাস আলী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।