ক্রিকেট বোর্ডের ওপর সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকায় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির সদস্যপদ হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। ফলে তারা এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এখন নিষিদ্ধ রয়েছে। সদস্যপদ হারানোর পরিপ্রেক্ষিতে জিম্বাবুয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজ খেলতে আসছে না বলে আগেই নিশ্চিত করা হয়েছিল।
তবে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবার ভিন্ন এক তথ্য জানিয়েছেন। সোমবার (৫ আগস্ট) আবাহনী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা, দেশবরেণ্য ক্রীড়া সংগঠক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ক্লাব ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি জানান জিম্বাবুয়ে নাকি বাংলাদেশে খেলতে আসছে!
পাপন বলেন, আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় থাকলেও জিম্বাবুয়ে ঠিকই ঢাকা আসবে এবং আমরা যে আফগানিস্তান আর জিম্বাবুয়েকে নিয়ে তিন জাতি ক্রিকেট আসর আয়োজনের চিন্তা করছি, তাতে অংশও নেবে। আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়লেও জিম্বাবুয়ের বাংলাদেশে আসা নিয়ে কোনো সংশয় নেই। সেটা আইসিসির ওই নিষেধাজ্ঞায় ধর্তব্য হবে না। তারা শুধু আইসিসি আয়োজিত নিজস্ব ইভেন্টে অংশ নিতে পারবে না। জিম্বাবুয়ে ঠিকই বাংলাদেশে আসবে।
আইসিসির সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২.৪ (সি) এবং (ডি) লঙ্ঘন করায় সভামণ্ডলীর সকলের সর্বসম্মতিক্রমে জিম্বাবুয়েকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এই আইনে বলা হয়েছে, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিকভাবে দল নির্বাচন এবং যথাযথভাবে ক্রিকেটের শাসন অথবা প্রশাসনে কোনো সরকারের হস্তক্ষেপ থাকতে পারবে না। এই নিয়মের বেড়াজালে পড়েই ক্রিকেট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে জিম্বাবুয়ে নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আনে মুসোন্ডার সঙ্গে মুশাঙ্গে, তাসমিন গ্র্যাঙ্গার ও শার্নে মেয়ার্স আইসিসির গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েন এবং ইংল্যান্ডে টি-২০ সিরিজ খেলা থেকে বঞ্চিত হন। নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় পর নিজের অবসরের ঘোষণাও দেন জিম্বাবুয়ের হয়ে ১২ টেস্ট, ৯৭ ওয়ানডে ও ৩২টি টি-২০ ম্যাচ খেলা সিকান্দার রাজা এবং ২টি টেস্ট ও ৪৭টি ওয়ানডে খেলা সলোমন মায়ার।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে বর্ণবাদী আচরণের অপরাধে আইসিসির সদস্যপদ হারানোর কারণে ২০ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আইসিসির নিজস্ব টুর্নামেন্ট তো বটেই, কোনো দেশের সঙ্গে তারা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ পর্যন্ত খেলতে পারেনি। তাই জিম্বাবুয়ে দলের বাংলাদেশ সফরে আসা নিয়ে বোর্ড সভাপতি যে কথা জানিয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থেকেই যায়।