মুন্সীগঞ্জে পায়ের জুতা খুলে ঢুকতে হয় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ভবনে
তুষার আহাম্মেদ - বুধবার (২৪ মে) ঘড়ির কাঁটায় বেঁজে বেলা ১১ টা।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন ৭০ বছর বয়সী সালামত সরকার।
ওই ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। এসেছেন জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সম্পর্কে জানতে। কিন্তু তিনি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতর প্রবেশ করছেন না। তার কাছে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবনের ভেতর ঢুকতে হলে পায়ের জুতা খুলে যেতে হবে। এজন্য কিছুটা অস্বস্তি থেকেই তিনি বাইরে দাঁড়িয়ে ভাবছেন কি করবেন। একই সময় ভবনের ভেতর সিঁড়িতে বসে থাকা সালমা আক্তার ও রেনু বেগমসহ বেশ কয়েকজনকে দেখা গেছে খালি পায়ে রয়েছেন। তাদের কাছেও জানতে চাওয়া হয় খালি পায়ে থাকার কারন। এ সময় তারা জানিয়েছেন জুতা খুলে খালি পায়েই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে প্রবেশ করতে হয়। তাই সিঁড়ির নীচে জুতা খুলে খালি পায়ে ঢুকেছেন।
এদিকে, গত এক বছর ধরেই সেবা প্রত্যাশীদের বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ভবনের জুতা খুলে ভেতর ঢুকতে হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েল নির্দেশে জুতা খুলে খালি পায়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে প্রবেশের এ নিয়ম চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউপি সচিব ফিরোজ আহম্মেদ আজাদ।
তিনি জানান, এক বছর আগে ভবনের মেঝে ও সিঁড়ি টাইলস্ করা হয়েছে। এজন্য পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার খাতিরে জুতা খুলে প্রবেশ করতে হয়।
তিনি বলেন, শুধু মাত্র সেবা প্রত্যাশী নয়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেলাতেও একই নিয়ম মানতে হয়। সেবা প্রত্যাশী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও জুতা খুলে ভেতরে ঢুকতে হবে।
এ ব্যাপারে জানতে বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করা হলে তাকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি। পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নাম্বারে একাধিকবার কল হলেও তিনি তা গ্রহন করেননি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, জুতা খুলে প্রবেশের কোনো ঘটনা তার জানা নেই। এনিয়ে তিনি খোঁজ-খবর নিবেন। তবে তিনি বলেন, এমনিতে ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে আনা ইউপি সদস্যদের অনাস্থার বিষয়ে তদন্ত চলছে।#