ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সংবাদ সম্মেলন পণ্ড করে দিয়েছেন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম মশিউজ্জামান। রোববার দুপুরে জেলা শহরের মৌলভীপাড়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত লুৎফুল হাই সাচ্চুর বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়েজন করা হয়।
এ নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম মশিউজ্জামান ও সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সঙ্গে আয়োজকদের আধাঘণ্টা বাদানুবাদ হয়। এ সময় সদর মডেল থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শিমুল একজন সাংবাদিকদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ নিয়েও সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের বাদানুবাদ হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের প্রতিহিংসা ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগের একাংশ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আমানুল হক সেন্টু বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনের প্রাক্কালে বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আমাদের অবস্থান ব্যাখা করার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও শহর আওয়ামী লীগ কোনো ব্যবস্থা নিতে কিংবা সুপারিশ করতে পারেন না। সুতরাং সদর উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আইনগত অধিকার নেই।
তিনি আরও বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নেতাকর্মীদের কাছে আমাদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমিসহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি শফিকুল আলম, বর্তমান সিনিয়র সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মিনারা আলম ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কাউসার আহমেদকে দল থেকে বহিস্কারের জন্য বেআইনিভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছেন। আমরা আওয়ামী লীগের কেউ নয় বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আমানুল হক সেন্টুর লিখিত বক্তব্যের মাঝখানেই সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে সদর মডেল থানা পুলিশের একটি দল এসে সেন্টুর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেন।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বি এম মশিউজ্জামান জানান, এখানে সংবাদ সম্মেলন করার অনুমতি নেই। আরেকপক্ষ একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করতে বলেন তিনি।
এ নিয়ে উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের বাদানুবাদ হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতারা সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করতে বাধ্য হন। এ সময় পুলিশের এএসআই মো. শিমুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের পাঠাগার ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি মোশাররফ হোসেন বেলালের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গেও পুলিশের বাদানুবাদ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আমানুল হক সেন্টুর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মিজানুর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মিনারা আলম ও জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি কাউসার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনস্থলের বাইরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন।