মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের ডা. সাইদ হোসেনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের জনসাধারণের অভিযোগ
মোঃ সাখাওয়াত হোসেন মানিক
মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের কর্মরত ডা. সাইদ হোসেন-এর একাধিক অনৈতিক ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনসাধারনের অভিযোগ। উক্ত ডাক্তার তাঁর পেশাগত দায়িত্বের অপব্যবহার করে রোগীদের শারীরিক ও আর্থিকভাবে শোষণ করছেন, যা জনস্বাস্থ্য ও নৈতিক চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য একটি ভয়াবহ হুমকি।
শনিবার ২৮ জুন মুন্সীগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডা. সাইদ হোসেন এর কক্ষের সামনে সেবা নিতে আসা জনসাধারনের লম্বা লাইন,কিন্তু তাহার কক্ষে তালা ঝুলছে।
এবিষয়ে অপেক্ষামান রোগীরা জানায় আমরা গত মঙ্গলবারেও এসেছিলাম কিন্তু ডাক্তারকে পাইনি। সিরাজদীখান মালখানগর থেকে আসা কিডনি রোগী হালিমা বেগম বলেন,আজসহ আমি তিনদিন আছলাম কিন্তু ডাক্তারের রুম বন্ধই পেলাম।
তাঁর বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী জনসাধারনের অভিযোগসমূহ হলো:
ঔষধ কোম্পানির সঙ্গে গোপন চুক্তি: ডা. সাইদ হোসেন কোম্পানির সাথে চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক স্থাপন করে রোগীদের প্রয়োজনবিহীন ওষুধ লিখে দিচ্ছেন। এতে রোগীদের শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করানোর কৌশল: তিনি রোগীদের ভয়ভীতি ও কৌশলের মাধ্যমে ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বাধ্য করেন, যা অনেক নিম্ন আয়ের মানুষের মাসিক আয়ের থেকেও বেশি। যেমন “Contrast CT Scan of Head” এর জন্য ৭৫০০ টাকা আদায় করা হয়েছে, যার পেছনে কমিশন গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে (প্রমাণস্বরূপ ভাউচার সংযুক্ত করা হয়েছে)।
সরকারি হাসপাতালের রোগীকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো: ডা. সাইদ হোসেন সরকারি দায়িত্বে থেকে সদর হাসপাতালের রোগীদের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তার নিজস্ব চেম্বার (ফেমাস হেলথ কেয়ার, মানিকপুর, মুন্সীগঞ্জ) এ পাঠিয়ে কমিশন গ্রহণ করেন।
সরকারি দায়িত্বে অবহেলা: প্রতিদিন রোগীর দীর্ঘ সারি থাকলেও তিনি প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার সরকারি হাসপাতালে দায়িত্ব পালন থেকে নিজ উদ্যোগে বিরত থাকেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও নৈতিকতাবিরোধী।
লিখিত প্রতারণা:তার কার্ড ও প্রেসক্রিপশনে চর্ম,যৌন,মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ লেখা থাকলেও বাস্তবে তার ডিগ্রি নেফ্রোলজি (এমডি) এবং এমসিপিএস (মেডিসিন) তারমানে কিডনি ও মেডিসিনের ডাক্তার শিশু ও চর্ম-যৌন লিখে সাধারন মানুষকে ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এই ধরনের অনিয়ম ও প্রতারণামূলক আচরণ মুন্সীগঞ্জের সাধারণ জনগণের জন্য চরম ক্ষতিকর। এমন একজন ডাক্তার, যাঁর ওপর রোগীরা আস্থা রাখে, যদি এইভাবে দায়িত্বহীন ও স্বার্থান্ধ আচরণ করেন, তবে পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী জনসাধারনের দাবী অবিলম্বে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ যেন তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে যথাযথ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এবিষয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক বর্তমানে (ভারপ্রাপ্ত পরিচালক) আরিফুজ্জামান বলেন,ডাঃ সাইদ হোসেন ছুটি নিয়েছে আমি তা সঠিক জানিনা,তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যদি রোগিদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এবিষয়ে হাসপাতালের আর এম ও আহসান হাবিব বলেন, উনাদের সেক্টরের সকল কিছু দেখেন তত্বাবধায়ক আপনারা উনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
এবিষয়ে ডাঃ সাইদ হোসেনের সাথে টেলিফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোন রিষিব না করায় কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
তারিখ ২৮-০৬-২৫